অকশন শিট কি ?

অকশন শিট কি ?

অকশন শিট দেখে রিকন্ডিশন ভাল গ্রেডের গাড়ি কেনার উপায়!


রিকন্ডিশন গাড়ি ছবিসহ সব খুঁটিনাটি সবকিছু একটি কাগজের মধ্যে লিখে একসাথে অকশন হাউসে রাখা হয়। যাতে যে কেউ কাগজগুলো পড়ে গাড়ি সম্পর্কে চটজলদি একটি স্বচ্ছ ধারণা পেতে পারে । তারা যে অকশন শিটটি বানায় সেই শিট দেখে যে কেউ গাড়ি কিনে ফেলতে পারেন । কারণ অকশন শিটটি হুবহু গাড়ির নির্ভুল বর্ণনা দিয়ে লেখা হয়।



অকশন  শিটের প্রয়োজনীয়তা

অকশন শিটে একটি গাড়ির সবকিছুর বিশদ বর্ণনা দেয়া থাকে যেগুলো দেখে আপনি গাড়িটি কিনতে পারবেন । অকশন শিট দেখলে আপনার রিকন্ডিশন গাড়ি চোখে দেখারও প্রয়োজন পড়বে না। অকশন শিটে গাড়ির গ্রেড ও মাইলেজের উপর ভিত্তি করে গাড়ির মূল্য নির্ধারণ করা হয়। যেমন-  একটি গাড়ি যদি ৫০,০০০ কিমি চলে তাহলে সেটার দাম বেশী হবে আর তুলনায় ১০,০০০ কিমি মাইলেজের গাড়ির দাম কম হবে।

 রিকন্ডিশন গাড়ি গ্রেডের ব্যাখ্যা

অকশন শিটে গাড়ির গ্রেডিং তিনটি ব্যাপারের উপর ভিত্তি করে করা হয়।

1.  প্রথমত এক্সটেরিওর (বাহিরের অবস্থা)
2.  দ্বিতীয়ত ইন্টেরিওর (ভেতর এর অবস্থা)
3.  এবং তৃতীয়ত মাইলেজ
 
1. প্রথমত এক্সটেরিওর (বাহিরের অবস্থা) গ্রেড পদ্ধতি

গাড়ির ডেন্ট, ঘষা খাওয়া বা অন্য কোন সমস্যা A,B,C,D দিয়ে বোঝানো হয়। যথাক্রমে   A,B,C,D দিয়ে গাড়ির অল্প সমস্যা থেকে বেশী সমস্যা নির্দেশ করে।
গ্রেড A -এক্সটেরিওর একদম নতুনের মত দেখতে হলে হবে A
গ্রেড B -একটু দাগ তবে খুব সহজেই তোলা যাবে এমন হলে হবে B
গ্রেড C – যদি গাড়ির এক্সটেরিওরের অবস্থা মোটামোটি  ভালো থাকে কিন্তু অল্প কোন পোড়া  দাগ থাকে তাহলে সেটা হবে C গ্রেড।
গ্রেড D – সবশেষে D গ্রেড নিয়ে বোঝানো হয় যে এক্সটেরিওরের অবস্থা খুবই খারাপ।
গ্রেড S – গ্রেড S দিয়ে একটি ঝকঝকে নতুনে মত গাড়ি বোঝানো হয়। এই S গ্রেডের গাড়ি দেখলে মনে হবে একেবারে নতুন। বাংলাদেশে মূলত S গ্রেডের গাড়ি ব্র্যান্ড নিউ কার বলে বিক্রি করা হয়ে থাকে। এছাড়া আরো কিছু অক্ষর দ্বারা এক্সটেরিওর গ্রেড নির্ধারণ করা হয় –
A- গাড়ির উপরের অংশে কোন দাগ
U – গাড়িতে কোন প্রকার গর্ত থাকলে
B – দাগের সাথে কিছু গর্ত দেখা গেলে
W–গাড়িতে হালকা কাজ করানো হয়েছে এমন
S -জং ধরা ( কমলা রং দেখা যায় এমন)
C -জারা ( জং বেড়ে ভেতরের ধাতুর অংশ দেখা যায় এমন)
P -রংয়ের দাগ
H- রং উঠে যাওয়া
XX – প্যানেল প্রতিস্থাপন করা
X – কোন পার্টসের প্রতিস্থাপন করা প্রয়োজন
G -গ্লাসে পাথর টুকরা
Y-  ফাটা কোন কিছু দেখা গেলে
E- টোল খাওয়া


2. দ্বিতীয়ত ইন্টেরিওর (ভেতর এর অবস্থা)

গ্রেড A – এই গ্রেডে বোঝানো হয়  গাড়ির ভেতরে কোন পার্টস খোয়া যায়নি । সব পার্টস মজুত রয়েছে।

গ্রেড B – এই গ্রেডের গাড়িগুলো মোটামোটি ভালো। কোন রং,ডেন্ট বা মেরামতের প্রয়োজন পড়বে না ।

গ্রেড C –অল্প কিছু মেরামতের প্রয়োজন পড়তে পারে। যেমন- সিগারেটের পোড়া দাগ, খাবারের দাগ ,স্ক্রুর কোন গর্ত ইত্যাদি থাকতে পারে।

গ্রেড D – এই গ্রেডের গাড়িগুলো মোটামোটি খারাপ হয়। দাগ,পোড়া দাগ অথবা অন্য দাগ লক্ষ্য করা যায়।

গ্রেড E – খুবই খারাপ অবস্থার কোন গাড়িকে  গ্রেড E তে ফেলা হয়। ড্যাশ বোর্ড ভাঙ্গা, সীটগুলো জীর্ণ এবং অনেক মেরামতের প্রয়োজন হতে পারে।


3. এবং তৃতীয়ত মাইলেজ

 গ্রেড 7, 8, 9 অথবা S- এই গ্রেড দেওয়া হয় এমন গাড়িগুলোকে যেগুলো নতুন এবং  নিলামে  শুধুমাত্র ডেলিভারি মাইলেজে বিক্রি করা হয়।

গ্রেড 6- নতুন গাড়ির জন্য এই গ্রেড দেওয়া হয় কিন্তু ডেলিভারি মাইলেজ আরেকটু বেশী হয়। মাইলেজ সর্বোচ্চ ৩০০০০ কিমি পর্যন্ত হয়। কোন ধরনের দাগ থাকলে গ্রেড 6 দেওয়া হয়না। অর্থাৎ আপনি খালি চোখে দেখে বুঝতেই পারবেন না যে গাড়িটি পুরানো না নতুন।

গ্রেড 5- এমন গাড়িতে এই গ্রেড দেওয়া হয় যেগুলো মাইলেজ সর্বোচ্চ ৫০০০০ কিমি হয় । দুই একটা আচরের দাগ থাকতে পারে। নিশ্চিন্তে ৫ বছর চালাতে পারবেন ।

গ্রেড 4.5- গাড়ির অবস্থা চমৎকার  কিন্তু মাইলেজ ১ লাখের উপর

গ্রেড 4- গাড়ির অবস্থা  বেশ ভালো এবং বেশ নির্ভরযোগ্য।  কিন্তু মাইলেজ কোন সমস্যা না (বেশিও হতে পারে কমও হতে পারে)। ফিল্ড টেস্টে অভিজ্ঞদের চোখে পাশ করা গাড়িগুলো ফেলা হয় এই গ্রেডে।

গ্রেড 3.5- অনেকটা গ্রেড 4 এর মতন গাড়িতে করা হয় কিন্তু রং আর প্যানেলে কিছু কাজ করার দরকার পড়তে পারে।

গ্রেড 3- জরুরী ভিত্তিতে রং আর প্যানেলের কাজ করাতে হবে অথবা প্যানেল জরুরী ভিত্তিতে পাল্টাতে হবে। শর্ত আর মেয়াদ অনুযায়ী গ্রেড 3 এর মতই কিন্তু মাইলেজ অনেক বেশী থাকে।

গ্রেড 2- খারাপ অবস্থার গাড়িগুলো 2 গ্রেডে ফেলা হয়। এই গ্রেডে গাড়ির শোচনীয় অবস্থা বোঝানো হয় । গর্ত, ক্ষয় ইত্যাদি গুরুতর সমস্যা নির্দেশ করে এই গ্রেডে। আপনি যদি ক্লাসিক বা বাস , ট্রাক জাতীয় গাড়ি খোজেন তাহলে এই গ্রেড থেকেই নির্বাচন করতে পারেন।

গ্রেড 1-দুই রকম হতে পারে-

১। ইঞ্জিনের মডিফিকেশন

২।অটো থেকে ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন পরিবর্তন

গ্রেড 0, A, R, RA – এই গাড়িগুলো পূর্বে মেরামতের ইতিহাস  থাকে। নিলামে গাড়ির ভেতরের প্যানেল ঠিক করার কথা উল্লেখ থাকবে। এই মেরামত কম হতে পারে আবার বেশিও হতে পারে।

অনেক সময় দেখা যায় R/RA গ্রেড এর গাড়ি 4 গ্রেড এর চেয়েও ভালো হয়।  যেমন  একটি ৪ গ্রেড এর গাড়ি মাইলেজ ১ লাখ কিলোমিটার আর একটা R /RA গ্রেড আর গাড়ি ২০ হাজার কিলোমিটার, গাড়িতে অল্প কিসু পরিবর্তন করা হইয়াসে । আবার  R /RA গ্রেড গাড়ি হলেই যে গাড়ি টি ভালো না, বা ভালো তা বলা যাবে না তাই গাড়ি কিনবেন অকশন সিট ভালো মতো বুঝে। 




USS ACUTION হাউসের বাইরের দৃশ্য



Popular posts from this blog

TOYOTA ESQUIRE HYBRID YEAR 2020 DAA-ZWR80G ZWR80-0439261

TOYOTA NOAH 2017 HYBRID ZWR80-0243586

TOYOTA COROLLA FIELDER 2018 HYBRID NKE165-7189629